মিউচুয়াল ফান্ড হল বর্তমানে বহু মানুষের একটি অতি পছন্দের বিনিয়োগের মাধ্যম, যা দিন প্রতিদিন জনপ্রিয়তা লাভ করছে, বিশেষ করে গত কয়েক বছরে এই জনপ্রিয়তা সর্বাধিক বেড়েছে। আপনাকে যদি প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা মুদ্রাস্ফীতির সাথে মানিয়ে নিয়ে আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে চলতে হয়, তবে অবশ্যই আপনার বিনিয়োগের দিকে নজর দেওয়া উচিৎ।
আপনার অর্থ যদি আপনি সেভিংস অ্যাকাউন্টেই রাখেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি ৩-৫% সুদ পেয়ে থাকবেন যা মুদ্রাস্ফীতির হারের প্রায় সমান, তাই আর্থিক পরিস্থিতি উন্নত করার স্বার্থে অনেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পথ বেছে নিয়েছেন।
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হল এই মিউচুয়াল ফান্ড। তবে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই আপনার এই ফান্ড সম্বন্ধিত বিষয়গুলি জেনে রাখা উচিৎ। এই নিবন্ধে মিউচুয়াল ফান্ড কি, এই ফান্ডে বিনিয়োগের সুবিধা, মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হল।
মিউচুয়াল ফান্ড কি
মিউচুয়াল ফান্ড কেন এত জনপ্রিয় এবং অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম তা এবার দেখে নাওয়া যাক। আপনি যদি সরাসরি কোন স্টক, বন্ড, গোল্ড বা অন্য কোন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করতে চান সেক্ষেত্রে শেয়ারের দাম অনুযায়ী আপনার ঝুঁকি বেশি থাকে কারন আপনি একটি মাত্র স্থানে বিনিয়োগ করছেন।
বিনিয়োগ সর্বদাই মার্কেটের সাথে সংযুক্ত থাকায় তা কম বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েই থাকে। তাই দেখা যায় কখনও কোন কোম্পানি স্টকের দাম পরে গেল তো আবার গোল্ডের দাম সে সময় বেড়ে গেল, বা আবার কখন উল্টো ঘটতেও দেখা যায়।
তাই কোন নির্দিষ্ট একটি স্থানে বিনিয়োগ না করে একই মূল্যে যদি একাধিক স্থানে বিনিয়োগ করা হয় তবে তার ঝুঁকি অনেক কম থাকে এবং দীর্ঘ মেয়াদের ক্ষেত্রে তা লাভবান হতেই দেখা যায় কারন দীর্ঘ সময়ের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী হওয়াই স্বাভাবিক।
মিউচুয়াল ফান্ড ঠিক এই কাজটিই করে, যেখানে মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাটি একাধিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ও তা স্টক, বন্ড, গোল্ড বা কোন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে থাকে এবং বিনিয়োগের লাভ বা ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের অবদানের অনুপাতে ভাগ করা হয়। ফলস্বরূপ এমনিতেই ঝুঁকি অনেক কম হয়ে যায় কারন আপনি একাধিক স্থানে বিনিয়োগ করেছেন যেখানে কোন একটির দাম পরে গেলেও অন্যটি দ্বারা লাভ হয় কারন দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষেত্রে মার্কেট সর্বদাই ঊর্ধ্বমুখী।
এছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড পেশাদার বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কারনে আপনাকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর বাড়তি চিন্তা করতেও হয় না।
মিউচুয়াল ফান্ডের সুবিধা
মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে আপনি নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি পাবেনঃ
ডাইভার্সিফিকেশন বা বিনিয়োগের বৈচিত্রতা
কোন বিনিয়োগের বা সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি অতি প্রচলিত কথা যা আমরা সকলেরই জানা তা হল কখনও সমস্ত ডিম একটি ঝুড়িতে রাখতে নেই, ঠিক তেমনই আপনি যদি কোন একটি মাত্র স্টক বা বন্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেটির বাজার খারাপ হলেই আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে তাই ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে ডাইভার্সিফিকেশন বা বিভিন্ন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়ে বলে ঝুঁকির পরিমাণ এক্ষেত্রে অনেক কম হয়।
পেশাদার বিশেষজ্ঞ
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের আরও একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল বাজার সংক্রান্ত বিষয় পেশাদার বিশেষজ্ঞর সহায়তা লাভ করা, কারন আর্থিক বাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দক্ষতার অবশ্যই প্রয়োজন।
আপনি যদি সরাসরি বিনিয়োগ করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই বাজার সংক্রান্ত গবেষণা করতে হবে যার জন্য আপনার অর্থনীতি বিষয়, স্টক, বন্ড বা কোম্পানির আর্থিক বিষয়গুলি সম্পর্কেও জ্ঞান থাকতে হবে।
কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডে আপনি অল্প খরচেই একজন পেশাদার ফান্ড ম্যানেজার পাবেন যিনি অভিজ্ঞ ও দক্ষতার সাথে সম্পূর্ণ ফান্ডটি পরিচালনা করবেন।
কম ঝুঁকিতে উচ্চতর রিটার্নের সম্ভাবনা
যে কোনো বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই কম বেশি ঝুঁকি থাকেই, তবে কম ঝুঁকি সম্পন্ন অন্যান্য বিনিয়োগগুলির তুলনায় বা সেভিংস অ্যাকাউন্টের থেকে মিউচুয়াল ফান্ডে উচ্চতর রিটার্ন দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি
মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে আপনি ন্যূনতম বিনিয়োগের মাধ্যমে একাধিক ক্ষেত্রে আপনার অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ পান, যা আপনার বিনিয়োগের ঝুঁকি কম করতে ও ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে থাকে।
লিকুইডিটি সুবিধা
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের আরও একটি সুবিধা হল এর লিকুইডিটি, অর্থাৎ আপনি সহজেই ফান্ডের বর্তমান নেট অ্যাসেট ভ্যালুতে শেয়ার কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন তাই এক্ষেত্রে আপনাকে বিনিয়োগের অর্থ আটকে থাকার বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
সহজেই বিনিয়োগ
মিউচুয়াল ফান্ডে খুব সহজেই আপনি বিনিয়োগ করতে পারবেন, এবং বিনিয়োগের জন্য স্টক মার্কেট বা বিনিয়োগের কৌশলগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকার প্রয়োজনীয়তা নেই। আপনার বিনিয়োগের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবে মিউচুয়াল ফান্ড এবং পেশাদার বিশেষজ্ঞ দ্বারা সম্পূর্ণ ফান্ডটি পরিচালনা করা হবে, যেখানে আপনার সক্রিয় ভাবে জড়িত থাকার কোন প্রয়োজন নেই।
সুরক্ষিত
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের আরও একটি কারন হল এটির সুরক্ষা। মিউচুয়াল ফান্ডগুলি, মিউচুয়াল ফান্ড রেগুলেশনস, ১৯৯৬ এর অধীনে ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ (SEBI) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং যথাযথ স্বচ্ছতা বজায় রাখার বিষয় বিশেষ নজর দিয়ে থাকে।
ট্যাক্স সুবিধা
মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগগুলি যদিও করমুক্ত নয়, তবে ‘ইক্যুইটি-লিঙ্কড সেভিংস স্কিম’ বা ‘ট্যাক্স-সেভিং ফান্ড’ (ELSS) এবং কিছু রিটায়ারমেন্ট বা অবসর তহবিলের ক্ষেত্রে আপনি ট্যাক্স বেনিফিটের যোগ্য। আয়কর আইন অনুসারে, ধারা 80C-এর অধীনে, আপনি ELSS-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড় দাবি করতে পারেন৷
মিউচুয়াল ফান্ড কীভাবে কাজ করে?
মিউচুয়াল ফান্ড হল একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, এটি নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে কাজ করে থাকেঃ
বিনিয়োগের জন্য অর্থ সংগ্রহ
মিউচুয়াল ফান্ডে বহু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে থাকেন। সেই সমস্ত অর্থ একত্রিত করে একটি তহবিল তৈরি করা হয়, যাতে বিভিন্ন স্টক, ডিবেঞ্চার এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ কেনা যেতে পারে।
শেয়ার
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার অর্থ হল ফান্ডের শেয়ার ক্রয় করা। প্রতিটি শেয়ারের মূল্যকে বলা হয় নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV), যা নিত্য পরিবর্তনশীল। ফান্ডের শেয়ারের মূল্য ফান্ডের সিকিউরিটির পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করে উপর বা নীচে হয়ে থাকে যা প্রতিটি ট্রেডিং দিনের শেষে হিসাব করা হয়।
পেশাদার বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালনা
একত্রিত করা ফান্ডের টাকা অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজার মার্কেট ও অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ফান্ডের রিটার্ন বিবেচনা করে বিভিন্ন শেয়ার ও সিকিউরিটিজ কেনার জন্য পুনর্বিনিয়োগ করে।
মিউচুয়াল ফান্ড বিভিন্ন স্টক, বন্ড, গোল্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি আলাদা আলাদা অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে বলে এক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক কম থাকে।
লাভ বা ক্ষতি
মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারী তার শেয়ার বিক্রির সময় যদি ফান্ডের নেট অ্যাসেট ভ্যালু বেড়ে থাকে তবে তিনি লাভ করেন অন্যথা তার ক্ষতি হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাভের সম্ভাবনাই সর্বাধিক হয়ে থাকে।
মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার
মিউচুয়াল ফান্ডগুলি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে এবং প্রতিটি মিউচুয়াল ফান্ডের এক একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও ঝুঁকির মাত্রা থাকে।
মিউচুয়াল ফান্ডগুলিকে তার অ্যাসেটের ধরণ, বিনিয়োগের ধরণ, বিনিয়োগের উদ্দেশ্য ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে অনেকগুলি আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ করা যায়, নিচে সেগুলির তালিকা দেওয়া হল।
অ্যাসেটের ধরণের ওপর নির্ভর করে মিউচুয়াল ফান্ডগুলিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়-
ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড
ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে আপনার অর্থ স্টকগুলিতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই ধরণের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূলধনের মূল্যায়ন করা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে স্টকগুলির গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হয় এবং এটি বাজার সংযুক্ত হওয়ার কারনে এই তহবিলের ঝুঁকি অনেক বেশি হয়ে থাকে।
তাই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন অবসর গ্রহণের জন্য বা নিজস্ব বাড়ি কেনার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এটি একটি ভাল বিনিয়োগ এবং সময়ের সাথে সাথে এর ঝুঁকির মাত্রাও কমে আসে।
ডেবিট মিউচুয়াল ফান্ড
ডেবিট মিউচুয়াল ফান্ড বা ঋণ তহবিলের ক্ষেত্রে সরকারি সিকিউরিটিজ এবং কর্পোরেট বন্ডের মতো সম্পদে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই ধরণের তহবিলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ ইক্যুইটি ফান্ডের তুলনায় অনেক কম থাকে এবং এটি যুক্তিসঙ্গত রিটার্নও প্রদান করে থাকে। তাই কম ঝুঁকি সম্পন্ন একটি স্থির আয়ের ক্ষেত্রে এই ধরণের ফান্ডে বিনিয়োগ অবশ্যই একটি ভাল বিকল্প।
হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ড
হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ড হল ইক্যুইটি ও ডেবিট মিউচুয়াল ফান্ডের মিশ্রন। আপনি যদি ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের মতো উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন বিনিয়োগের সাথে কম ঝুঁকি সম্পন্ন সিকিউরিটিজ মিলিয়ে বিনিয়োগ করতে চান তবে তাই হল হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ড।
এই ফান্ডের ক্ষেত্রে কত শতাংশ করে ইক্যুইটি ও ডেবিটের অংশ থাকবে তার ওপর ভিত্তি করে আবার এর কিছু ভাগ আছে যেমন ব্যালেন্সড ফান্ড, অ্যাসেট অ্যালোকেশন ফান্ড ইত্যাদি।
কাঠামোর উপর ভিত্তি করে মিউচুয়াল ফান্ডগুলিকে নিম্নলিখিত ভাগ করা যায় যেমন-
ওপেন-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড
ওপেন-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো ব্যবসায়িক দিনে ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারবেন। ওপেন-এন্ডেড তহবিলগুলি অত্যন্ত লিকুইড, এক্ষেত্রে আপনি আপনার সুবিধামত যে কোনও ব্যবসায়িক দিনে আপনার ইউনিটগুলি বিক্রি করতে পারেন৷
ওপেন এন্ডেড ফান্ডে কোন ম্যাচিউরিটি পিরিয়ড থাকে না, অর্থাৎ আপনি যতদিন ইচ্ছে এই ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
ক্লোজ-এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড
ক্লোজ-এন্ডেড ফান্ডগুলির ক্ষেত্রে একটি পূর্ব-নির্ধারিত ম্যাচিউরিটি পিরিয়ড থাকে। বিনিয়োগকারীরা শুধুমাত্র এই ফান্ড চালু হওয়ার সময়ই তহবিলে বিনিয়োগ করতে পারেন। এই ফান্ড গঠনের পর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শেয়ার ইস্যু করা হয় এবং তা স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত করা হয়ে থাকে। পরবর্তী সময় আর কোনও নতুন শেয়ার তৈরি করা হয় না।
এই ফান্ডের লিকুইডিটি নেই বললেই চলে, শুধুমাত্র মেয়াদপূর্তির সময়েই ফান্ড থেকে আপনি অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ধরণ
মিউচুয়াল ফান্ডে আপনি নিম্ন উল্লিখিত দু-ধরণের বিনিয়োগ করতে পারবেন যথাক্রমে-
এককালীন বিনিয়োগ
আপনি এককালীন বিনিয়োগের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ারের দাম সেই দিনের নেট অ্যাসেট ভ্যালুর ওপর নির্ভর করবে, যেমন যদি নেট অ্যাসেট ভ্যালু বা ন্যাভ ২০০/- টাকা হয় তাহলে আপনি ১০,০০০/- টাকা দিয়ে মোট ৫০ টি শেয়ার কিনতে পারবেন।
সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP)
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হল এই সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান, যেখানে বিনিয়োগের জন্য আপনার এককালীন বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে আপনি সামান্য কিছু টাকা দিয়েও বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন যেমন প্রতি মাসে ৫০০-১০০০/- টাকা।
এই প্ল্যানের অন্যতম সুবিধা হল যে এখানে আপনাকে একবারে বেশি অর্থ দিতে হয় না অথচ প্রতি বছর আপনি একটি ভাল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারছেন, তাছাড়া এই ধরণের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনার বাজারের ওঠা পড়ার ওপর নজর রাখার কোন দরকার হয় না।
মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করব
নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে আপনি সহজেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন-
কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
প্রতিটি মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানির নিজস্ব অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে আপনি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ও অনলাইন কেওয়াইসি ভেরিফিকেশনের পর বিনিয়োগ করতে পারবেন।
কোম্পানির অফিস
আপনি সরাসরি মিউচুয়াল ফান্ডের শাখা অফিস বা ‘বিনিয়োগকারী পরিষেবা কেন্দ্র’ (ISC) অথবা এজেন্টের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।
কোম্পানির অ্যাপ
আপনি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলির নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন অথবা থার্ড পার্টি কোম্পানিগুলির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। সেখানে আপনি সহজেই মিউচুয়াল ফান্ডগুলির পোর্টফোলিও চেক ও তুলনা করতে পারবেন, এছাড়া অ্যাকাউন্টের ডিটেলস, ইউনিট কেনা-বেচা ও শেয়ারের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে পারবেন।