Updated on August 21st, 2024 ||
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পটি হোল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প, যা রাজ্যের সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার উদ্দেশ্যে ও সু-চিকিৎসার স্বার্থে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে সেকেন্ডারি বা দ্বিতীয় স্তরের স্বাস্থ্যসেবা এবং টারশারি বা তৃতীয় স্তরের রোগ চিকিৎসার জন্য পরিবার প্রতি বার্ষিক ₹৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হয়।
এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে রাজ্য সরকার দ্বারা অর্থায়ন করা হয় যা সম্পূর্ণ রূপে নগদহীন এবং স্মার্ট কার্ড ভিত্তিক। বর্তমানে প্রায় ১.৫ কোটি পরিবার এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড লাভ করেছে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কথা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে একটি রাজ্য স্তরের কমিটি গঠন করা হয় এবং ৩০শে ডিসেম্বর ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি চালু করা হয়েছিল।
প্রকল্পটি শুরুর সময় ৯টি জেলায় ‘ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি’ এবং ১১টি জেলায় ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি’ বীমার অংশীদার ছিল, পরবর্তীকালে অংশীদার রূপে বাজাজ আলিয়াঞ্জ ১৮টি জেলায় এবং আইএফএফসিও টোকিও ৫টি জেলায় বীমা অংশীদার হিসেবে নির্বাচিত হয়।
২০২০ সাল থেকে পুনরায় ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ৬টি জেলায় বীমা পার্টনার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়, ৯টি জেলায় ওরিয়েন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে এবং বাকি ৮টি জেলায় ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে বীমা পার্টনার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের মানুষদের উন্নত পরিষেবার সাথে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা লাভের সুবিধা করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে, যা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যগুলির কাছে অবশ্যই একটি দৃষ্টান্ত মূলক উদ্যোগ।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প বিবরণ
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণটি নিচে দেওয়া হলঃ
যোজনার নাম | স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প |
উদ্যোক্তা | পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
প্রকল্প বাজেট | ₹২,৫১০/- কোটি টাকা |
শুরুর সময় | ২০১৬ সাল |
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ | পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দপ্তর |
লাভার্থী | পশ্চিমবঙ্গের পরিবার সকল |
উদ্দেশ্য | মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা |
বয়স সীমা | কোন বয়স সীমা নেই |
অনুদানের পরিমাণ | পরিবার প্রতি বার্ষিক ₹৫ লক্ষ টাকা |
আবেদন পদ্ধতি | অনলাইন এবং অফলাইন |
সরকারী ওয়েবসাইট | swasthyasathi.gov.in |
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে একাধিক উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাওয়া যাবে, নিচে সেগুলি তালিকাভুক্ত করা হলঃ
বার্ষিক ₹৫ লক্ষ টাকা কভারেজঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে সেকেন্ডারি এবং টারশারি বা তৃতীয় স্তরের রোগ চিকিৎসার জন্য পরিবার প্রতি বার্ষিক ₹৫ লক্ষ টাকার কভারেজ দেওয়া হয়।
পরিবারের ক্যাপিংঃ
এই প্রকল্পে পরিবারের আকারের উপর কোন ক্যাপিং নেই। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের পিতামাতাই হলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অন্তর্ভুক্ত এবং পরিবারের শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও এই কার্ডের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। পরিবারের প্রধান হিসেবে পরিবারের বয়স্ক মহিলা সদস্যের নামে কার্ডটি জারি করা হয়।
প্রিমিয়ামঃ
এটি একটি স্বাস্থ্য বীমা এবং এর প্রিমিয়াম সম্পূর্ণটাই রাজ্য সরকার প্রদান করে থাকে অর্থাৎ সুবিধাভোগীদের কোনরূপ অর্থ প্রদান করতে হবে না।
প্রাক-বিদ্যমান রোগ কভারঃ
এই স্বাস্থ্য বীমার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হোল যে এতে সুবিধাভোগীদের সমস্ত প্রাক-বিদ্যমান রোগেরও কভারেজ দেওয়া হয়।
সম্পূর্ণ নগদহীন হাসপাতালে ভর্তিঃ
এই কার্ডের অধীনে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির ১ দিন আগে থেকে ডাক্তারের পরামর্শ, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা এবং ওষুধের খরচ কভার করা হয়ে থাকে। রোগীর সার্জারি এবং একই অসুস্থতার জন্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ৫ দিন পর্যন্ত ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচেরও কভারেজ প্রদান করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন রোগীর খাবারের খরচ কভারেজের অন্তর্ভুক্ত নয়।
ডিসচার্জের পরে পরিবহন ভাতাঃ
এই কার্ডের অধীনে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের জন্য ₹২০০/- টাকা পরিবহণ খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং রোগী যদি রাজ্য সরকার পরিচালিত হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ হন সেক্ষেত্রে, ₹২০০/- টাকার উপরে অতিরিক্ত ₹৪০০/- থেকে ₹৭০০/- পরিবহন ভাতাও দেওয়া হয়।
তালিকাভুক্ত হাসপাতালঃ
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে সুবিধাভোগীরা ১৫০০ টিরও বেশি তালিকাভুক্ত হাসপাতাল পরিষেবা পাওয়ার জন্য বেছে নিতে পারবেন এবং প্রতিদিন আরও হাসপাতাল এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত হচ্ছে।
স্বচ্ছ হাসপাতাল গ্রেডেশনঃ
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অন্তর্গত হাসপাতালগুলিকে বীমা কোম্পানি বা থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর দ্বারা যাচাই করা হয় এবং উপলব্ধ সুবিধা ও পরিষেবাগুলির প্রাপ্ত নম্বরের উপর ভিত্তি করে গ্রেড করা হয়। তাই স্বাস্থ্য সাথীর অধীনে তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলি প্রত্যেকটি উন্নত পরিষেবার যোগ্য।
প্রাক-অনুমোদিত চিকিৎসাঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে সমস্ত চিকিৎসা ২৪ ঘন্টা TAT (টার্নরাউন্ড টাইম) এর মধ্যে ১০০% প্রাক-অনুমোদিত থাকে যাতে এই কার্ডের সুবিধাভোগীদের দ্রুত চিকিৎসা পেতে কোন অসুবিধা না হয়।
দ্রুত দাবি নিষ্পত্তিঃ
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের দাবিগুলি ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে পর্যবেক্ষণ করে নিষ্পত্তি করা হয় অন্যথায় চুক্তি অনুযায়ী সুদ দিতে হয় তাই সুবিধাভোগী এই কার্ড ব্যবহার করে বিশেষ সুবিধা লাভ করেন।
স্মার্ট কার্ড ভিত্তিক লেনদেনঃ
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে সুবিধাভোগীরা পেপারলেস, ক্যাশলেস এবং সম্পূর্ণরূপে ৬৪Kb স্মার্ট কার্ডে পরিষেবাগুলি গ্রহণ করেন। এই কার্ডে ডিজিটালি এনক্রিপ্ট করে তথ্যগুলি সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে এবং নথিভুক্তির সময় সুবিধাভোগীকে সেই তথ্যগুলি দেওয়া হয়। এই স্বাস্থ্য সাথী স্মার্ট কার্ড আজীবনের জন্য বৈধ এবং প্রতি বছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি পুনর্নবীকরণ করা হয়।
বাধ্যতামূলক ই-স্বাস্থ্য রেকর্ডঃ
এই প্রকল্পে রোগীর তথ্য, ই-স্বাস্থ্য রেকর্ড সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে যাতে চিকিৎসকরা পরবর্তীকালে প্রয়োজন মতো সেই তথ্য অনুসারে পরামর্শ করতে পারেন।
ক্লাউড ভিত্তিক সিস্টেমঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সম্পূর্ণ সিস্টেমটি কাগজবিহীন এবং ক্লাউড ভিত্তিক আইটি প্ল্যাটফর্মের উপর ভিত্তি করে করার ফলে, অনলাইন নিরীক্ষণের মাধ্যমে মূল্যবান সময় বাঁচান এবং পরিষেবাগুলি দ্রুত সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী প্যাকেজঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে ২০৯২টি প্যাকেজ উপলব্ধ আছে। এই প্যাকেজের হারগুলি পরিবর্তনশীল এবং প্যাকেজ নির্বাচন কমিটি দ্বারা তা যুক্তিযুক্ত ভাবে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
মেশিন বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে সিস্টেম ভিত্তিক ট্রিগার ব্যবস্থা রয়েছে যাতে হাসপাতালপক্ষ বা থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা কোন বীমার দ্বারা হাসপাতালের সমস্ত বেড ভর্তি না হয়, উচ্চ মূল্যের প্যাকেজগুলি সমস্ত ব্লক না হয়ে থাকে, দাবি করা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে করা হয়নি অথবা অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বা আইসিইউ-এর অধীনে রাখা হয়েছে, নির্দিষ্ট দিনে অনেক রোগীর জন্য একই প্যাকেজ ব্লক করা হয়েছে ইত্যাদি।
স্বাস্থ্য সাথী মোবাইল অ্যাপঃ
স্বাস্থ্য সাথী মোবাইল অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যায় এবং তথ্য, অভিযোগ ইত্যাদি করার সুবিধা রয়েছে এবং এর মধ্যে একটি ওয়ান-টাচে সরাসরি ২৪x৭ হেল্প লাইনের সাথে যুক্ত হওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
এসএমএস সুবিধাঃ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধাভোগী হাসপাতালে ভর্তির সময় এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে এসএমএস-এর মাধ্যমে রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরে তা জানিয়ে দেওয়া হয়।
টোল ফ্রি কল সেন্টারঃ
সুবিধাভোগীদের সহায়তার জন্য ২৪x৭ টোল ফ্রি কল সেন্টার ১৮০০-৩৪৫৫-৩৮৪ এর ব্যবস্থা রয়েছে যা স্মার্ট কার্ডের পিছনে উল্লেখ করা থাকে৷ এছাড়া সুবিধাভোগীরা ফেসবুক, টুইটার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
অনলাইন অভিযোগ মনিটরিং সুবিধাঃ
স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধাভোগীরা অনলাইন পোর্টালে তাদের অভিযোগ পোস্ট করতে পারেন।
ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইটঃ
স্বাস্থ্য সাথী সুবিধাভোগীদের জন্য একটি ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষ তাদের যোগ্যতা, তালিকাভুক্তির বিশদ ইত্যাদি যাচাই করতে পারবেন৷ এছাড়া সাধারণ প্রশ্নের জন্য ‘হাও ক্যান আই হেল্প ইউ’ অর্থাৎ হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থাও রয়েছে৷
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের যোগ্যতা
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পেতে নিম্নলিখিত যোগ্যতার মানদণ্ডগুলি পূরণ করতে হবেঃ
- আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে।
- পরিবারের প্রধান মহিলা, তার স্বামী, মা, বাবা, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং নির্ভরশীল সন্তান এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে কভারেজের যোগ্য৷
- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে পরিবারের শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী নির্ভরশীল ব্যক্তিকেও কভারেজ দেওয়া হয়।
- যে সমস্ত ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই কোনো সরকারি স্পনসরড হেলথ্ ইন্স্যুরেন্স স্কিমের আওতায় আছেন তারা স্বাস্থ্য সাথী স্কিমের যোগ্য নয়।
- যে সমস্ত কর্মচারীরা তাদের বেতনের অংশ হিসাবে একটি মেডিকেল ভাতা পান, তারা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের কভারেজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কারন তারা ইতিমধ্যেই তাদের চাকরির মাধ্যমে চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এপ্লাই অনলাইন
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য অনলাইনেই এপ্লাই করা যায়। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে আপনি পোর্টাল থেকে অনলাইন এপ্লাই করতে পারবেনঃ
- আপনাকে প্রথমে স্বাস্থ্য সাথীর অফিসিয়াল পোর্টাল swasthyasathi.gov.in -এ যেতে হবে।
- ওপরের মেনু থেকে ‘Apply Online’ এর ভেতরে ‘Online Application for Swasthya Sathi Card’ -এ ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনার মোবাইল নম্বরটি লিখে ‘Get OTP’ তে ক্লিক করতে হবে, এবং আপনার মোবাইলে যে OTP যাবে সেটি লিখে ‘Submit’ এ ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনি মূল আবেদনের পেজ ‘FORM-B’ তে পৌছাবেন, এই ফর্মটি আপনাকে সম্পূর্ণ পূরণ করতে হবে যেখানে আপনার জেলার নাম, ব্লক বা মিউনিসিপ্যালিটি, শ্রেণী ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।
- আবেদনকারী যদি কোন সরকারী ডিপার্টমেন্টে কর্মরত হন সেক্ষেত্রে তা উল্লেখ করতে হবে, এরপর সম্পূর্ণ ঠিকানা লিখে নিচে পিনকোডটি লিখতে হবে।
- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আবেদনকারীর নাম পরিবারের প্রধান বয়স্কা মহিলার নামে করতে হয়। নিচে পরিবারের প্রধানের নাম হিসেবে তার বাবা অথবা স্বামীর নামটি লিখতে হবে।
- আবেদনকারী বা তার পরিবারের কোন সদস্য যদি সরকারী চাকরি না করে থাকেন তবে ‘OFFICE NAME & ADDRESS’ এর স্থানটিতে কিছু উল্লেখ করতে হবে না। এরপর আবেদনকারীর কোন সরকারী স্বাস্থ্য বীমা করা আছে কিনা এবং কোন সরকারী বা প্রাইভেট কোম্পানির মেডিকেল অ্যালাওয়েন্স পান কিনা তা উল্লেখ করতে হবে।
- এরপর নিচে আবেদনকারীর পরিবারে পুরুষ এবং মহিলা উভয় আছেন কিনা তা উল্লেখ করতে হবে এবং নিচে ‘Member List’ এ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নাম, আবেদনকারীর সাথে সম্পর্ক, বয়স, লিঙ্গ, আধার নম্বর ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। ফর্মটি সম্পূর্ণ পূরণ করা হয়ে গেলে পুনরায় যাচাই করে নিয়ে ‘Submit’ বাটনে ক্লিক করতে হবে তাহলেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড চেক
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আবেদনের পর আপনি পোর্টাল থেকে সহজেই আবেদনের স্ট্যাটাসটি চেক করে নিতে পারবেন।
- আপনাকে স্বাস্থ্য সাথীর পোর্টাল swasthyasathi.gov.in -এ যেতে হবে।
- ওপরের ‘Apply Online’ মেনুর ভেতরের দ্বিতীয় সাবমেনু ‘Check Your Online Application Status for Swasthya Sathi Card’ তে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনাকে জেলাটি সিলেক্ট করতে হবে এবং ‘Family ID’ অথবা ‘Adhaar No’ টি লিখে সাবমিট করতে হবে, তাহলেই আপনি আপনার স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের স্ট্যাটাসটি চেক করে নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হেল্পলাইন নম্বর
24×7 পরিষেবা পাওয়ার জন্য টোল ফ্রি নম্বর হলঃ 18003455384
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সম্পর্কিত প্রশ্ন
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে কি কি কভারেজ পাওয়া যায়?
স্বাস্থ্য সাথী হোল একটি স্বাস্থ্য বীমা, যেখানে পরিবার প্রতি বছরে ৫ লক্ষ টাকার কভারেজ পাওয়া যায় এবং সমস্ত বিদ্যমান রোগ এই বীমা কভারেজের অন্তর্ভুক্ত৷ এই বীমার অধীনে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের রোগের চিকিৎসা করা হয় এবং এই কভারেজের মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ, ডায়াগনস্টিক টেস্ট, এবং হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে হওয়া ওষুধের খরচ, সেইসাথে অপারেশনের পর পাঁচ দিন পর্যন্ত চিকিৎসা-পরবর্তী খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে কি ধরনের হাসপাতালে সুবিধা পাওয়া যাবে?
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে যোগ্যতার মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে সরকারী এবং বেসরকারী উভয় হাসপাতালগুলিই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালগুলির উপলব্ধ সুযোগ-সুবিধা এবং পরিকাঠামো অনুসারে গ্রেড করা হয়েছে, যেমন গ্রেড এ, গ্রেড বি, গ্রেড সি এবং গ্রেড আর।
সুবিধাভোগীরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বা অফিসিয়াল পোর্টাল থেকে হাসপাতালে উপলব্ধ সুবিধাগুলি দেখে নিতে পারবেন এবং তাদের সুবিধা অনুযায়ী কাছের হাসপাতাল বেছে নিতে পারবেন।
আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (OPD) এবং ইন পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (IPD) উভয়ই কি স্বাস্থ্য সাথীর অধীনে চিকিৎসা যোগ্য?
স্বাস্থ্য সাথীর অধীনে OPD কভার করা হয় না, তবে OPD যদি IPD-তে রূপান্তরিত করা হয়, তবে চিকিৎসার সমস্ত খরচ প্রকল্পের আওতায় পড়বে।
স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধাভোগীকে কি কি নথি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে?
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধাভোগীকে শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ড এবং সরকার কর্তৃক জারি করা কোন পরিচয়পত্র নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে এবং সুবিধার জন্য রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরটি রাখবেন।
গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে কি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহার করা যায়?
হ্যাঁ, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতাল এবং এম প্যানেলড হাসপাতালগুলিতে মেটারনিটি ফেসিলিটি পাওয়া যাবে। এছাড়া সন্তান প্রসব ছাড়াও গাইনকোলজিক্যাল অনেক রোগের চিকিৎসার সুবিধাও রয়েছে এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে।
হাসপাতালে ভর্তি না হলেও কি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাওয়া যায়?
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধাভোগী যদি হাসপাতালে ভর্তি না হন, তবে সেক্ষেত্রে কোন সুবিধা পাওয়া যাবে না।