Updated on July 21st, 2024 ||
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনাটি (PMFBY) হোল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচতে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের শস্য বীমা যা ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের সাহায্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের ফসলের ক্ষতি হ্রাস করতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
এই যোজনাটি পূর্বের দুটি যোজনা যথাক্রমে ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল ইন্স্যুরেন্স স্কিম (NAIS)’ এবং ‘মডিফাইড ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল ইন্স্যুরেন্স স্কিম (MNAIS)’ কে প্রতিস্থাপন করেছে তার অন্যতম কারনগুলি হোল ফসল বীমা যোজনার কিস্তির পরিমাণ অনেক কম এবং আগের যোজনাগুলিতে সরকারী ভর্তুকিতে ক্যাপিং ছিল যা এখন সরানো হয়েছে তাই বর্তমান যোজনায় কৃষক কোন ঘাটতি ছাড়াই দাবিকৃত পরিমাণ সম্পূর্ণটাই পাবেন।
ভারত সরকার এই যোজনায় ৮,৮০০ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিটি স্তরের কৃষকদের কথা মাথায় রেখে ফসল বীমার প্রিমিয়ামের পরিমাণ খুবই কম রাখা হয়েছে, যা কৃষকরা সহজেই পরিশোধ করতে পারবেন।
কৃষকদের খরিফ ফসলের জন্য শুধুমাত্র ২% এবং রবি শস্যের জন্য ১.৫% প্রিমিয়াম দিতে হবে। এই স্কিমটি শুধুমাত্র খরিফ এবং রবি ফসলের জন্য নয়, বাণিজ্যিক এবং উদ্যান ফসলের জন্যও সুরক্ষা প্রদান করে। বাণিজ্যিক এবং উদ্যান ফসলের জন্য কৃষকদের ৫% প্রিমিয়াম (কিস্তি) দিতে হয়। এই সমস্ত কারনে যোজনাটি শুরুর প্রথম বছর থেকেই অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ২০২১ সালের অগাস্ট মাসের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ৬ কোটির বেশী কৃষক এই বীমা করিয়েছেন।
ফসল বীমার অধীনে সেচযোগ্য কৃষি জমিতে ধান চাষের জন্য বীমা কভারেজের পরিমাণ হল প্রতি হেক্টরে ₹৬০,০০০/- টাকা, যার প্রিমিয়ামের পরিমাণ হল ₹১২০০/- টাকা এবং সেচবিহীন জমির ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে বিমার পরিমাণ হল ৪৩ হাজার টাকা, যার প্রিমিয়াম হল ₹৮৬০/- টাকা। তেমনই, উরদ এবং মুগের ক্ষেত্রে বিমার পরিমাণ হল হেক্টর প্রতি ₹২২,০০০/- টাকা এবং প্রিমিয়ামের পরিমাণ হল ₹৪৬০/- টাকা।
তবে মনে রাখতে হবে যে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন শিলাবৃষ্টি, খরা, দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কভারেজ প্রদান করে। যদি অন্য কোনো কারণে ফসলের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে বীমাকৃত অর্থ পাওয়া যাবে না।
এই বীমার মাধ্যমে ফসল চাষে ঝুঁকির পরিমাণ অনেকাংশেই কমান সম্ভব হয়েছে। কৃষকেরা কম ঝুঁকির কারনে কৃষিকাজে উৎসাহিত বোধ করছেন এবং খরা ও বন্যার কারণে কৃষকের আত্মহত্যার সংখ্যাও কমেছে ও ফলস্বরূপ ভারতের মোট উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার উদ্দেশ্য
এই যোজনার মূল উদ্দেশ্যগুলি নিচে বর্ণনা করা হলঃ
- ফসল বীমা যোজনার অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
- কৃষকদের যতটা সম্ভব ক্ষতি পূরণের মাধ্যমে তাদের আয় স্থিতিশীল করা এবং কৃষি কাজে উৎসাহিত করা।
- কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী কৃষি পদ্ধতি গ্রহণে সহায়তা করা।
- এই যোজনার মাধ্যমে উৎপাদনের ঝুঁকি থেকে কৃষকদের রক্ষা করা অনেকাংশেই সম্ভব হয়েছে এবং শস্য বৈচিত্র্য বজায় রাখা ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা বিবরণ
যোজনার নাম | প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা |
উদ্যোক্তা | ভারত সরকার |
যোজনা চালু হওয়ার দিন | ১৮ই অগাস্ট ২০১৬ |
দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রণালয় | কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয় |
উদ্দেশ্য | প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি কমাতে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা |
সর্বাধিক সরকারী ভর্তুকি | সরকারি ভর্তুকির কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই |
সরকারী ওয়েবসাইট | pmfby.gov.in |
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার বৈশিষ্ট
এই যোজনার বৈশিষ্টগুলি নিচে উল্লেখ করা হলঃ
- এই বীমার আওতায় সব ধরনের ফসল যেমন রবি, খরিফ, বাণিজ্যিক ও উদ্যানজাত ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- কৃষকদের সুবিধার জন্য বীমার প্রিমিয়াম (কিস্তি) খুব কম রাখা হয়েছে যাতে সকল স্তরের কৃষকরা সহজেই ফসল বীমার সুবিধা নিতে পারেন।
- রবি শস্য যেমন গম, যব, ছোলা, মসুর, সরিষা ইত্যাদির জন্য শুধুমাত্র ১.৫% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
- খরিফ ফসল যেমন ধান বা চাল, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, আখ ইত্যাদির ক্ষেত্রে ২% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
- বাণিজ্যিক এবং উদ্যান ফসলের জন্য বার্ষিক ৫% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
- এই বীমার পরিধি বিস্তৃত করে এখন কুটকি, উড়দ, মুগ, চিনাবাদাম, কড়ো, অরহর, তুর, রাগি এবং সয়াবিনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার ঝুঁকি কভারেজ
এই যোজনায় আপনি কি কি ধরণের ঝুঁকির ক্ষেত্রে বীমা কভারেজ পাবেন তা দেখে নিনঃ
বেসিক কভারঃ
এই স্কিমের বেসিক কভারটি স্থায়ী ফসলের বপন থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত ক্ষতির ঝুঁকি বহন করে থাকে। এই বীমা অপ্রতিরোধযোগ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, খরা, প্লাবন, জলবদ্ধতা, শুষ্কতা, কীটপতঙ্গ বা রোগের আক্রমণ, ভূমিধস, ঝড়, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি বা দাবানলের মত প্রাকৃতিক আগুনের কারণে ফলনের ক্ষতির ঝুঁকি বহন করে। এই ধরনের ব্যাপক ক্ষতির ক্ষেত্রে এলাকা ভিত্তিক পদ্ধতির ভিত্তিতে ক্ষতি কভার করা হয়।
প্রতিরোধকৃত বপন/অঙ্কুরোদগম/রোপনের ঝুঁকিঃ
যদি বীমাকৃত এলাকাটিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি বা প্রতিকূল জলবায়ু বা মৌসুমী অবস্থার কারণে বপন বা অংকুরোদগম বা রোপণ করা থেকে বিরত থাকে, তাহলে বীমাকৃত ফসলটির ক্ষতিপূরণ দাবির জন্য যোগ্য হবে।
মাঝামাঝি মৌসুমের প্রতিকূলতাঃ
যদি ফসল ফলনের সময় প্রতিকূল মৌসুমী অবস্থার কারণে ক্ষতি হয় যেমন দীর্ঘায়িত শুষ্কতা, বন্যা বা তীব্র খরা ইত্যাদির জন্য ফলন স্বাভাবিক ফলনের ৫০% এর কম হয়, তাহলে বীমাকৃত কৃষকদের অবিলম্বে ত্রাণ প্রদান করা হয়।
ফসল-পরবর্তী ক্ষতিঃ
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় ফলন-পরবর্তী ক্ষতির কভারেজ পাওয়া যায়। যদি ফসল কাটার দুই সপ্তাহের মধ্যে ফসল শুকানো বা প্রয়োজন অনুযায়ী কাটা অথবা ছোট বান্ডিল অবস্থায় ক্ষেতে থাকে এবং সেই সময়ে ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি বা অমৌসুমি বৃষ্টির মত কোনও বিপর্যয় ঘটে, তবে কৃষকরা বীমার দাবি করতে পারবেন। এই সমস্ত কাজের জন্য এই প্রকল্পে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে ফসলের ক্ষতি নির্ণয় দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে করা যায় এবং কৃষকরা দ্রুত ক্ষতিপূরণ পান।
স্থানীয় দুর্যোগঃ
শিলাবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা এবং ল্যান্ড স্লাইডের মতো দুর্যোগগুলিকে স্থানীয় দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত করা হবে। পুরানো স্কিমগুলির ক্ষেত্রে, যদি কৃষকের ক্ষেত জলে ডুবে থাকে তবে কৃষকের প্রাপ্ত দাবির পরিমাণ নির্ভর করতো বীমার ইউনিট (গ্রাম বা গ্রামের গোষ্ঠীতে মোট ক্ষতি) কত তার ওপর। এ কারণে অনেক সময় নদীর তীরে অবস্থিত ক্ষেত বা নিচু জমিতে ক্ষতি হলেও দাবির পরিমাণ পাননি কৃষকরা। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় এই নীতির পরিবর্তন করা হয়েছে এবং এটিকে স্থানীয় ক্ষতি হিসাবে বিবেচনা করে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সমীক্ষা করা হবে এবং তাদের দাবির পরিমাণ দেওয়া হবে।
সাধারণ বর্জনঃ
প্রাকৃতিক কারন ছাড়া অন্য কারনে ফসলের ক্ষতি হলে এই বীমা প্রযোজ্য হবে না যেমন কোন রকম দূষিত কারনে ক্ষতি বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে ক্ষতি অথবা পারমাণবিক কোন রকম ঝুঁকি এবং অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য ঝুঁকির ফলে সৃষ্ট ক্ষতি এই বীমা সুরক্ষা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, স্থানীয় দুর্যোগের জন্য ক্ষতি এবং ফসল কাটার পরে ক্ষতির ক্ষেত্রে সেইগুলি বীমাধারকের নিজস্ব খামারের স্তরে মূল্যায়ন করা হবে তাই কৃষক বা মনোনীত সংস্থাগুলির দ্বারা ক্ষতির তথ্য জমা দেওয়া আবশ্যিক। অবশিষ্ট ঝুঁকি বা যেগুলি ব্যাপক বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতগ্রস্ত হয়, সেই ধরনের বিস্তৃত বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বীমাধারকের পরিস্থতির কথা জানানোর প্রয়োজন হয় না। সেক্ষেত্রে জেলা স্তরের জয়েন্ট কমিটি (DLJC) এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের জমা দেওয়া গড় ফলনের উপর ভিত্তি করে দাবিগুলি গণনা করা হবে।
PMFBY -তে ক্ষতি দাবির প্রক্রিয়া
এখানে দুই ধরণের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ক্ষতির দাবি করা যেতে পারে – ১) বিস্তৃত বিপর্যয় এবং ২) স্থানীয় বিপর্যয়।
বিস্তৃত বিপর্যয় বা ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির ক্ষেত্রে ‘এরিয়া অ্যাপ্রোচ’ ভিত্তিতে কাজ হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে কতকগুলি গ্রাম নিয়ে এক একটি ইউনিট তৈরি করে সরকার পক্ষ থেকেই ক্ষয় ক্ষতির মান নির্ধারণ করে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়।
অন্যদিকে স্থানীয় বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে, ৭২ ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সর্বপ্রথমে ফসল বীমা অ্যাপ বা কেন্দ্রীয় টোল-ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি জানাতে হবে। এছাড়া, সরাসরি বীমা কোম্পানিকে বা তার ডেডিকেটেড টোল-ফ্রি নম্বরের মাধ্যমে বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অথবা স্থানীয় কৃষি বিভাগ সরকার/জেলা কর্মকর্তাদের তথ্য দিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার প্রয়োজনীয় নথিপত্র
এই বীমায় আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিগুলি নিচে উল্লেখ করা হলঃ
- কৃষকের জমির দলিল
- কৃষকের পরিচয়পত্র (আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড)
- কৃষকের ঠিকানা প্রমাণ (ভোটার কার্ড)
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ (ব্যাঙ্কের নাম, শাখা, অ্যাকাউন্ট নম্বর)
- কৃষকের ফসল বপন শুরু করা দিনের তারিখ
- আবেদন পত্র
আরও পড়ুনঃ কিষাণ ক্রেডিট কার্ড
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা ফর্ম ফিলাপ
PMFBY-এর জন্য অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ভাবেই আবেদন করা যায়। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া নিচে বর্ণনা করা হলঃ
- অনলাইন আবেদন করার জন্য আপনাকে PMFBY এর অফিসিয়াল সাইটে যেতে হবে এবং ‘ফার্মার কর্নার’ এ ক্লিক করতে হবে অথবা সরাসরি ফর্মের লিঙ্ক পেতে ক্লিক করুন প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা ফর্ম।
- আপনাকে ‘রেজিস্টার ফর নিউ ফার্মার ইউসার’ ফর্মটি পূরণ করতে হবে যেখানে কৃষকের বিশদ বিবরণ, আবাসিক বিবরণ, ফার্মার আইডি এবং অ্যাকাউন্টের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে।
- সমস্ত তথ্য পূরণ করার পর নিচে একটি ক্যাপচা আসবে এরপর নিচে ‘ক্রিয়েট ইউসার’ ক্লিক করার পর ফর্মটি সাবমিট হবে এবং অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের কাজটি সম্পন্ন হবে।
- আপনার নিউ ফার্মার ইউসার রেজিস্ট্রেশনের পর আপনি প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং তার জন্য আপনি ‘ফার্মার কর্নার’ থেকে লগইন করতে পারেন অথবা ওপরের মেনু থেকে ‘সিএসসি লগইন’ করতেও পারেন।
- আপনার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘সাইন ইন’ করার পর আপনাকে রাজ্য ও কোন বছরের এবং কি ধরনের ফসল (খরিফ/রবি) ও সাথে যোজনার নাম সিলেক্ট করে সাবমিট করতে হবে।
- এরপর ‘এপ্লিকেশন’ এ ক্লিক করে ‘সিএসসি এপ্লিকেশন’ পেজে আসতে হবে যেখানে আপনি আবেদন সম্পর্কীয় যাবতীয় তথ্য পাবেন।
- নতুন আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে ‘এপ্লিকেশন ফর্ম’ এ ক্লিক করতে হবে।
- এপ্লিকেশন ফর্মে যথাক্রমে আপনাকে ব্যাঙ্কের তথ্য, কৃষকের বিবরণ ও ফসলের বিবরণ যথাযত ভাবে পূরণ করে ‘মেক পেমেন্ট’ এর মাধ্যমে বীমার আবেদনের টাকা প্রদান করলেই কাজটি সম্পন্ন হবে।
PMFBY-এর জন্য অফলাইন আবেদন প্রক্রিয়াটি হোল নিম্নরূপঃ
- কৃষকদের বীমা কোম্পানিতে যেতে হবে এবং ‘ফসল বীমা প্রকল্প’ আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
- আবেদন ফর্ম পূরণ করার সাথে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে।
- আবেদনের অবস্থা যাচাই করার জন্য আবেদনের একটি রেফারেন্স নম্বর দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা মোবাইল অ্যাপ
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা মোবাইল অ্যাপের নাম হোল ‘ক্রপ ইন্সুরেন্স’। আপনি এই অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই নতুন আবেদন, বীমা প্রিমিয়ামের তথ্য, ফসলের ক্ষতির দাবি ইত্যাদি সব ধরনের সুবিধাই পেতে পারেন।
ক্রপ ইন্স্যুরেন্স অ্যাপটি ডাউনলোড করার প্রক্রিয়াটি নিচে বর্ণনা করা হলঃ
- আপনাকে মোবাইলের ‘প্লে স্টোর‘ এ যেতে হবে।
- ওপরের সার্চ -এ গিয়ে “Crop Insurance” লিখে সার্চ করতে হবে অথবা সরাসরি ক্লিক করুন ক্রপ ইন্স্যুরেন্স অ্যাপ।
- আপনি Install এ ক্লিক করে খুব সহজেই বীমা সম্পর্কীয় যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা সম্পর্কিত প্রশ্ন (FAQ)
PMFBY এর আওতায় কোন কোন ফসল আসবে?
প্রায় সব ধরনের ফসল (রবি, খরিফ, বাণিজ্যিক ও উদ্যান ফসল) এই বীমা যোজনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খরিফ ফসলের (ধান বা চাল, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, আখ ইত্যাদি) জন্য ২% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে। রবি শস্যের জন্য ১.৫% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে (গম, যব, ছোলা, মসুর, সরিষা ইত্যাদি) এবং বাণিজ্যিক ও উদ্যান ফসলের জন্য বার্ষিক ৫% প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার সীমা কত?
এই যোজনার সরকারি ভর্তুকিতে কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। বীমাধারককে সামান্য পরিমান প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে এবং ব্যালেন্স প্রিমিয়াম ৯০% হলেও তা সরকার বহন করবে।
PMFBY তে প্রিমিয়ামের পরিমান কত?
এই যোজনায় সবরকম কৃষকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে প্রিমিয়ামের পরিমান খুবই কম রাখা হয়েছে। খরিফ ফসলের ক্ষেত্রে ২%, রবি ফসলের ক্ষেত্রে ১.৫% এবং বার্ষিক বাণিজ্যিক এবং উদ্যান ফসলের ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের পরিমান হোল ৫%।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় বীমার দাবি জানানোর প্রক্রিয়াটি কী?
স্থানীয় বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে, বীমাকৃত কৃষককে অবিলম্বে বিপর্যয়ের ৭২ ঘন্টার মধ্যে ফসল বীমা অ্যাপ বা কেন্দ্রীয় টোল-ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করে ক্ষতির বিবরণ জানাতে হবে।
PMFBY তে দাবি নিষ্পত্তির জন্য সময়কাল কত?
PMFBY-এর অধীনে বীমার দাবিগুলি সাধারণত ফসল কাটার সময় শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে এবং বপন না করতে পারা, মধ্যকালীন ঋতুর প্রতিকূলতা এবং ফসল কাটার পরে ক্ষতির ঝুঁকির ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তির এক মাসের মধ্যে প্রদান করে থাকে।