বিশ্বকর্মা যোজনা। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, কারা পাবে, লিস্ট, কি কি লাগবে জানুন!

বিশ্বকর্মা যোজনাটি ভারতের কারিগরদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পূজার দিন এই যোজনাটি চালু করেন। এটি একটি অনন্য উদ্যোগ যেখানে দেশের বিভিন্ন কারিগর যেমন কামার, স্বর্ণকার, মৃৎশিল্পী, ছুতোর, ভাস্কর, রাজমিস্ত্রি ইত্যাদি ক্ষেত্রে আধুনিক বাজারের সমতুল্য এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনাটি (PMVY) ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ মন্ত্রণালয় (MSME), দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রণালয় (MSDE), আর্থিক পরিষেবা বিভাগ (DFS) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় (MoF) দ্বারা পরিচালনা করা হয়ে থাকে এবং এই প্রকল্পের জন্য ₹১৩,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্তমানে এই যোজনায় ২ কোটিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে এবং ১০ লক্ষেরও বেশি সুবিধাভোগী এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন।

Table of Contents

বিশ্বকর্মা যোজনা কি

ভারতীয় শ্রমজীবীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হল এই কারিগরশ্রেণী অর্থাৎ যারা প্রধানত তাদের হাত এবং সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করে থাকেন। সাধারণত এরা স্ব-নিযুক্ত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের অংশ হিসাবে বিবেচিত হন। 

এই সকল কারিগরগণের মধ্যে আছেন যেমন স্বর্ণকার, কামার, কুমোর, ছুতোর, মৃৎশিল্পী প্রভৃতি যারা হলেন দেশের ঐতিহ্যবাহী কারিগর এবং যাদের দক্ষতা প্রধানত গুরু-শিষ্য ঐতিহ্যেই কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে, এই সমস্ত কারিগরদেরকেই আমরা ‘বিশ্বকর্মা’ বলে থাকি।

‘পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা’ হল একটি অভিনব উদ্যোগ যার মাধ্যমে কারিগরদের সামগ্রিক সহায়তা প্রদান এবং কারিগরদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে যা আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে উন্নীত করবে পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষরূপে সহায়ক হয়েছে। 

এই যোজনার অধীনে মোট ১৮ টি ঐতিহ্যবাহী কারিগরী দক্ষতাকে স্থান দেওয়া হয়েছে যেগুলি সরকারী সহায়তায় উন্নত প্রশিক্ষণ ও সাথে আর্থিক সহায়তা প্রদান এছাড়া প্রশিক্ষণের পর স্বল্প সুদের হারে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ডস ট্রাস্ট ফর মাইক্রো অ্যান্ড স্মল এন্টারপ্রাইজ (CGTMSE)

বিশ্বকর্মা যোজনা

বিশ্বকর্মা যোজনা বিবরণ

বিশ্বকর্মা যোজনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে তালিকাভুক্ত করা হলঃ

যোজনার নামপ্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা (PMVY)
যোজনা শুরুর সময়১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩
যোজনার ধরণকেন্দ্র সরকার প্রকল্প
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ মন্ত্রণালয় (MSME), দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রণালয় (MSDE), আর্থিক পরিষেবা বিভাগ (DFS) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় (MoF)
সুবিধাভোগীভারতের কারিগরগণ
প্রকল্প বাজেট₹১৩,০০০ কোটি টাকা
উদ্দেশ্যদেশের ঐতিহ্যবাহী কারিগর বা নিজস্ব হাত ও সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করা কারিগরদের আর্থিক সহায়তা প্রদান
জামানত মুক্ত ঋণের পরিমাণ₹৩ লক্ষ টাকা
আবেদনঅনলাইন
সরকারী ওয়েবসাইটpmvishwakarma.gov.in

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা লোন

বিশ্বকর্মা যোজনা সুবিধা

পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে কারিগরগণ নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি পাওয়া পাবেনঃ

দক্ষতা বৃদ্ধিঃ

ভারতের ঐতিহ্যবাহী কারিগরদের দক্ষতা ও ক্ষমতা বাড়ানো হল বিশ্বকর্মা যোজনার অন্যতম লক্ষ্য, যারা প্রজন্ম ধরে হাত এবং সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করে আসছে, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিক টুলকিটের ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ছাড়াও বিপণন সহায়তা, এন্টারপ্রাইজ তৈরি, ক্রেডিট, ডিজিটাল লেনদেন ইত্যাদি সুবিধাগুলির সাথে পরিচয় করান হবে।

এই দক্ষতা বৃদ্ধি তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিতঃ দক্ষতা যাচাই, মৌলিক দক্ষতা এবং উন্নত দক্ষতা।

দক্ষতা যাচাইঃ

বিশ্বকর্মা যোজনার রেজিস্টার্ড কারিগরদের দক্ষতা যাচাইয়ের কাজটি হল সবচেয়ে প্রাথমিক। এই প্রাথমিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হল বিশ্বকর্মাদের তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, ঋণ পেতে সহায়তা করা এবং তাদের সরঞ্জামগুলিকে অত্যাধুনিক করা।

মৌলিক দক্ষতাঃ

মৌলিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের বিদ্যমান দক্ষতাগুলি আগে দেখে নেওয়া হবে এবং তারপর সহজভাবে সংক্ষিপ্ত প্রদর্শনমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের পর তাদের দক্ষতার মূল্যায়ন করে তা MSME এর সাথে শেয়ার করা হবে এবং তাদের সরঞ্জামের জন্য ইনসেনটিভ প্রদান করা হবে।

মৌলিক দক্ষতার প্রশিক্ষণ মোট ৪০ ঘন্টার হবে, অর্থাৎ দিনের হিসেবে ৫ থেকে ৭ দিনের মতো প্রশিক্ষণ হবে যেখানে অর্জিত দক্ষতার আনুষ্ঠানিককরণ এবং দক্ষতার আপগ্রেডেশন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কারিগরদের বিভিন্ন শিল্পের সাথে যুক্ত বাণিজ্যিক স্তরের আধুনিক সরঞ্জামের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই দক্ষতা প্রশিক্ষণের অন্যতম লক্ষ্য হল কারিগরদের তাদের পণ্যের গুণমান উন্নত করতে সুবিধা প্রদান করা।

উন্নত দক্ষতার প্রশিক্ষণঃ

বেসিক স্কিলিংয়ের পরে কারিগরদের আরও দক্ষতার উন্নতি করার জন্য তাদের ১২০ ঘণ্টা বা ১৫ দিন অথবা তার বেশি সময় ধরে উন্নত দক্ষতা প্রশিক্ষণের জন্য নথিভুক্ত করা হবে। এই উন্নত প্রশিক্ষণের প্রধান লক্ষ্য হবে যাতে কারিগরের জ্ঞানকে আরও গভীর করা যাতে বিশ্বকর্মারা আত্ম-কর্মসংস্থানে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বোধ করতে পারে।

স্টাইপেন্ডঃ

বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে বেসিক ও উন্নত দক্ষতার প্রশিক্ষণের পর প্রত্যেক সুবিধাভোগী প্রত্যেক প্রশিক্ষণের দিনের জন্য ৫০০/- টাকা করে স্টাইপেন্ড বা উপবৃত্তি পাবেন যা ডিবিটি মোডের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।

টুলকিট ইনসেনটিভঃ

এক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রশিক্ষণের শুরুতে দক্ষতা যাচাইয়ের পরে কারিগরকে ১৫,০০০/- টাকার একটি টুলকিট ইনসেনটিভ বা সরঞ্জাম কেনার টাকা প্রদান করা হবে, যা ই-RUPI/ ই-ভাউচারের মাধ্যমে তাদেরকে বিতরণ করা হবে। এই সমস্ত উন্নত টুলকিট ব্যবহার করার জন্য একটি ডিজিটাল গাইড এবং ছোট ভিডিও টিউটোরিয়াল প্রদান করা হবে।

ক্রেডিট সাপোর্টঃ

বিশ্বকর্মা যোজনার প্রধান লক্ষ্যই হল ঐতিহ্যবাহী কারিগরদের সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং সেই উদ্দেশ্যেই কারিগরদের মৌলিক দক্ষতার প্রশিক্ষণের পরে তাদের জামানত মুক্ত ‘এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট লোন’ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

  • ঋণ সহায়তার মোট পরিমাণ হল ৩ লক্ষ টাকা, যেখানে সুবিধাভোগীরা প্রথম ধাপে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন এবং দ্বিতীয় ধাপে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন।
  • ঋণ মাসে মাসে পরিশোধ করতে হবে।
  • ঋণের জন্য সুবিধাভোগীদের ৫% সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ভারত সরকার ৮% পর্যন্ত সুদের সাবভেনশন দেবে যা ব্যাঙ্কগুলিকে অগ্রিম প্রদান করা হবে।
  • সুবিধাভোগীরা ঋণের প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ উভয় ক্ষেত্রেই সুদের সাবভেনশন পাবেন।

পরিশোধের মেয়াদ নিম্নলিখিত টেবিলে উল্লেখ করা হলঃ

ধাপঋণের পরিমাণপরিশোধের মেয়াদ
১ম ধাপ১ লক্ষ টাকা১৮ মাস
২য় ধাপ২ লক্ষ টাকা৩০ মাস

ডিজিটাল লেনদেনে ইনসেনটিভঃ

এই যোজনায় UPI ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ইনসেন্টিভ প্রদান করা হয়ে থাকে, যেখানে প্রতিটি ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ১ টাকা (মাসিক সর্বাধিক ১০০টি লেনদেন পর্যন্ত) আধার পেমেন্ট ব্রিজ সিস্টেম (APBS) এর মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের আধার সংযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।

মার্কেটিং সাপোর্টঃ

বিশ্বকর্মা যোজনার ঋণগ্রহীতারা ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর মার্কেটিং’ (NCM) থেকে তাদের পছন্দের এলাকায় মার্কেটিং সাপোর্ট পাবেন। এই সমস্ত মার্কেটিং সাপোর্টের মধ্যে রয়েছে পণ্য এবং পরিষেবাগুলির জন্য ব্র্যান্ড বিল্ডিং, প্যাকেজিং, ডিজাইন, অনলাইন উপস্থিতি তৈরি করা, বাণিজ্য মেলার বিজ্ঞাপন, রপ্তানিকারকদের সাথে যোগাযোগ, পণ্যের গুণমান, ই-কমার্স পোর্টালে পণ্য তালিকাভুক্ত করা ইত্যাদি।

বিশ্বকর্মা যোজনা লিস্ট

বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে নিম্নলিখিত ১৮ টি ব্যবসা প্রাথমিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেখানে অসংগঠিত ক্ষেত্রের স্ব-নিযুক্ত কারিগরগণ সুবিধা লাভের যোগ্য হবেনঃ

নম্বরব্যবসাবর্ণনা
কাঠের কাজ
কাঠমিস্ত্রিযে সমস্ত কারিগররা নিজস্ব হাত ও সরঞ্জামের সাহায্যে কাঠের পণ্য তৈরি বা মেরামতের কাজ করেন
নৌকা নির্মাতাযে সমস্ত কারিগররা হাত এবং সরঞ্জাম দিয়ে কাঠের নৌকা তৈরি এবং মেরামতের কাজ করেন
লোহা/ধাতু অথবা পাথরের কাজ
আর্মারারযে সমস্ত কারিগররা হাত ও ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র যেমন তরোয়াল, ঢাল, ছুরি, হেলমেট ইত্যাদি তৈরি ও মেরামত করেন
কামারঅসংগঠিত ক্ষেত্রের যে সমস্ত স্ব-নিযুক্ত কারিগরগণ তাদের হাত এবং সরঞ্জাম দিয়ে লোহা, তামা, পিতল বা ব্রোঞ্জের মতো ধাতুর কাজ করেন
হাতুড়ি এবং টুল কিট মেকারযে সমস্ত কারিগররা তাদের হাত এবং সরঞ্জাম দিয়ে লোহার হাতুরি ও অন্যান্য টুল কিট তৈরি করেন
তালার মিস্ত্রিযে সমস্ত কারিগররা ছোট রাস্তার ধারে বা রাস্তায় ঘুরে হাত এবং ঐতিহ্যগত সরঞ্জাম যেমন কাটার, হাতুড়ি ইত্যাদির সাহায্যে তালা তৈরি এবং মেরামত করেন
ভাস্কর (মূর্তিকার,স্টোন কার্ভার), স্টোন ব্রেকারযে সমস্ত কারিগররা শিল্পী বা মূর্তিকার অর্থাৎ যারা তাদের হাত এবং সরঞ্জামের সাহায্যে খোদাই, ভাঙ্গা বা পাথর কেটে মূর্তি ইত্যাদি তৈরি করেন
সোনা রুপার কাজ
স্বর্ণকারযাদেরকে স্বর্ণকার বা রূপাকার বলা হয় অর্থাৎ যারা হাত ও সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করে মূল্যবান ধাতুর ডিজাইন তৈরি করে
মাটির কাজ
কুমোরযে সমস্ত কারিগররা হাত এবং সরঞ্জামের সাহায্যে ঐতিহ্যগত পদ্ধতিতে মৃৎপাত্র তৈরি করেন
চামড়ার কাজ
১০মুচি (চর্মকার)/জুতা/পাদুকাকারিগরস্ব-নিযুক্ত যে সকল কারিগররা রাস্তার পাশে ছোট স্টল বা রাস্তায় ঘুরে হাত এবং হাতুড়ি, সুই, সুতো ইত্যাদি ঐতিহ্যগত সরঞ্জাম ব্যবহার করে চামড়ার জুতো তৈরি ও মেরামত করেন
স্থাপত্য/নির্মাণ কাজ
১১রাজমিস্ত্রিযারা হাত এবং সরঞ্জামের সাহায্যে কাঠামো নির্মাণের কাজ, প্লাস্টারিং, ইট, বালি, সিমেন্ট, ওয়াটার প্রুফিং ইত্যাদি কাজ করেন
অন্যান্য
১২ঝুড়ি/ মাদুর/ ঝাড়ু তৈরিযে সকল কারিগররা বিভিন্ন ধরণের ঝুড়ি, মাদুর ইত্যাদি তৈরি করার জন্য নমনীয় উপকরণ দিয়ে বুনুনের কাজ করেন 
১৩ঐতিহ্যবাহী পুতুল এবং খেলনা তৈরিযে সমস্ত স্ব-নিযুক্ত কারিগরগণ ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে যেমন উল, সুতো, তুলা, কাঠ, ইত্যাদি দিয়ে পুতুল এবং খেলনা তৈরি করেন
১৪নাপিতস্ব-নিযুক্ত কর্ম সংস্থানের যে সমস্ত নাপিতরা কাঁচি, ব্লেড, চিরুনি, শেভিং ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে চুল কাটা,শেভিং ইত্যাদি কাজ করেন
১৫মালা তৈরির কাজযারা হাত দিয়ে ফুল, পাতা বা অন্যান্য উপকরণের সাহায্যে বিভিন্ন আলংকারিক মালা তৈরির কাজ করেন
১৬ধোপাযে সকল কারিগররা ঐতিহ্যবাহী উপায় যেমন স্থানীয় সাবান ব্যবহার করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কাপড় ধোয়া, ইস্ত্রি করার কাজ করে থাকেন
১৭দর্জিযে সমস্ত কারিগররা হাত সেলাই মেশিন, কাঁচি, বোতাম, কাপড়, সূঁচ, সুতো ইত্যাদি ব্যবহার করে সেলাইয়ের কাজ করেন
১৮মাছ ধরার জাল তৈরিস্ব-নিযুক্ত যে সমস্ত কারিগররা হাত দিয়ে দড়ি, সুতা বা সুতার মতো বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে মাছ ধরার জাল তৈরি করেন। তারা মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী ধরার জন্য নির্দিষ্ট নকশার টেকসই এবং বিভিন্ন আকারের জাল বোনার জন্য ঐতিহ্যগত কৌশল বা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারেন

বিশ্বকর্মা যোজনা কারা পাবে

পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার জন্য আবেদনকারীর নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলি থাকা প্রয়োজনঃ

  • আবেদনকারীকে এই যোজনায় উল্লিখিত ১৮টি নির্দিষ্ট পরিবার-ভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী ব্যবসার যেকোনো একটিতে কোন অসংগঠিত ক্ষেত্রে স্ব-কর্মসংস্থানের ভিত্তিতে নিযুক্ত একজন কারিগর হতে হবে।
  • আবেদনকারীর ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
  • আবেদনকারী তার নিজস্ব কর্মসংস্থান বা ব্যবসার উন্নতির জন্য বিগত ৫ বছরে অনুরূপ কোন কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের ক্রেডিট-ভিত্তিক প্রকল্পের অধীনে ঋণ নেওয়া উচিত নয়, যেমন PM SVANidhi, PMEGP, MUDRA ইত্যাদি। তবে যারা MUDRA এবং SVANidhi এ তাদের ঋণ সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করেছেন তারা PM বিশ্বকর্মার অধীনে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  • কোনো কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত আবেদনকারী এবং তার পরিবারের সদস্যরা (স্ত্রী এবং তাদের অবিবাহিত সন্তান) এই স্কিমের জন্য যোগ্য নয়।
  • বিশ্বকর্মা যোজনার সুবিধাগুলি শুধুমাত্র কোন পরিবারের একজন সদস্যই পেতে পারেন।

বিশ্বকর্মা যোজনা কি কি লাগবে

বিশ্বকর্মা যোজনায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলি প্রয়োজনঃ

  • আধার কার্ড
  • মোবাইল নম্বর
  • রেশন কার্ড (আবেদনকারীদের রেশন কার্ড না থাকলে তাদের পরিবারের সকল সদস্যের আধার নম্বর প্রদান করতে হবে)
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের না থাকলে আবেদনকারীকে প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং হ্যান্ডহোল্ডিং প্রক্রিয়াটি CSC দ্বারা সম্পন্ন হবে)

বিশ্বকর্মা যোজনা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন

বিশ্বকর্মা যোজনায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য ই-শ্রম কার্ড থাকার প্রয়োজন নেই, তবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনকারীকে কমন সার্ভিস সেন্টারে (CSC) যেতে হবে কারন বিশ্বকর্মা যোজনা পোর্টাল ‘pmvishwakarma.gov.in’ তে বর্তমানে CSC Login, Admin Login প্রভৃতি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই শুধুমাত্র এই যোজনার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব।

বিশ্বকর্মা যোজনা সম্পর্কিত প্রশ্ন

পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা কি?

PM বিশ্বকর্মা যোজনা হল একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ মন্ত্রক দ্বারা চালু করা হয়েছে, যেখানে কারিগরদের বাজার সমতুল্য দক্ষতার প্রশিক্ষণ, জামানতমুক্ত ঋণ, আধুনিক সরঞ্জাম ইত্যাদির সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।

বিশ্বকর্মা যোজনা কারা পাবে?

বিশ্বকর্মা যোজনার জন্য বর্তমানে নির্দেশিত ১৮টি ব্যবসায় নিযুক্ত কারিগররা যোগ্য যথাক্রমে কাঠমিস্ত্রি, নৌকা নির্মাতা, আর্মারার, কামার, হাতুড়ি এবং টুল কিট মেকার, তালার মিস্ত্রি, ভাস্কর, স্বর্ণকার, কুমোর, মুচি, রাজমিস্ত্রি, ঝুড়ি বা মাদুর তৈরি, ঐতিহ্যবাহী পুতুল এবং খেলনা তৈরি, নাপিত, মালা তৈরি, ধোপা,দর্জি ও মাছ ধরার জাল তৈরি।

বিশ্বকর্মা যোজনার প্রাথমিক ঋণের পরিমাণ কত?

বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে ‘এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট লোন’ হিসেবে প্রথমে ১৮ মাসের মেয়াদের জন্য ১ লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়া যায়।

বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে প্রাথমিক ঋণ পাওয়ার পর কখন দ্বিতীয় ঋণ পাওয়া যাবে?

এই যোজনার অধীনে দ্বিতীয় ধাপ লোনের পরিমাণ হল ২ লক্ষ টাকা, তবে এই লোণ তারাই পাবেন যারা একটি স্ট্যান্ডার্ড লোন অ্যাকাউন্ট বজায় রাখবেন এবং ব্যবসায় ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থা ও উন্নত দক্ষতার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে ঋণে সুদের হার কত?

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানতমুক্ত ‘এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট লোন’ পাওয়া যায় যার সুদের হার হল ৫% এবং মেয়াদ হল 4 বছর।

Leave a Comment